নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার ১ নং দুল্লা ইউনিয়নের বর্তমান বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ হাসিমের নামে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসছে। সর্বশেষ হজ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে নতুন করে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকার ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক মুজ্জার অভিযোগ করেন, হজে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মোহাম্মদ হাসিম তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। পরে প্রতারণা ধামাচাপা দিতে ও টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো মামলা-হামলার ভয় দেখানো হয়। মোজাম্মেল জানান, তিনি নিরুপায় হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন এবং অপপ্রচারের জবাবে এলাকার সজ্জন ব্যক্তিদের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত এক বিচারে প্রমাণিত হয় যে, হাসিম আসলেই প্রতারণা করেছেন। এসময় ভুক্তভোগীকে একটি চেক প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। অভিযোগকারী জানান, চেকের অঙ্ক ছিল প্রায় ১০ লাখ টাকা, কিন্তু সেই অর্থ এখনো তিনি পাননি। বরং নানা তালবাহানা করে হাসিম ওই অর্থ গায়েব করেন এবং এমনকি ভুক্তভোগীকে হত্যারও চেষ্টা চালান।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ সুজন বলেন, “হাসিমের প্রতিটা রক্তের ফোটার মধ্যেই অপরাধ মিশে আছে। সে পাথর ব্যবসায়ীর দোহাই দিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, কিন্তু কখনোই আসল ব্যবসা করেনি। সাংবাদিকরা খোঁজ নিলে সবই বের হয়ে আসবে।”
এলাকার এক সিনিয়র বিএনপি নেতা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবস্থায় জানান, “হাসিমের কারণে বহুবার দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে বিচারেও তার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও সে টাকা ফেরত দেয়নি।”
বিএনপির অপর এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, “সে আসলে বিএনপি করে না। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সে সেই দলের ছায়ায় আশ্রয় নেয়। আওয়ামী লীগের একজন মন্ত্রীর পরিচয় দিয়ে নিজ ছেলেকে চাকরি পাইয়ে দেয়। বর্তমানে তার ছেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি ভালো পদে কর্মরত। আর এভাবেই বাবা-ছেলে দুজনেই টাকার পাহাড় বানিয়েছে।”
এছাড়াও, প্রতারক হাসিমের পারিবারিক প্রেক্ষাপটও নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মুক্তাগাছার দুল্লা ইউনিয়নের চতল গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নিলেও, হাসিম ও তার ভাই শামীমকে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই প্রতারক হিসেবে চেনে।
হাসিমের নামে একের পর এক প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, রাজনৈতিক দলবদল ও অপরাধের অভিযোগ ওঠায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।