দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিএ) বাগানের একাংশ নষ্ট করে বালুর ব্যবসা করছেন রাজ্জাক নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। বাগান নষ্ট করে তাকে বালু ব্যবসার সুযোগ করে দিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর লোক পরিচয় দেওয়া মিজান নামে এক প্রতারক। বিনিময়ে তিনি রাজ্জাকের কাছ থেকে মাসে ১০ হাজার টাকা নেন।
বাগানের পশ্চিমাংশে কয়লা রেখে ব্যবসা করছেন আব্দুল হামিদ। তিনিও মাসে মিজানকে কয়েক হাজার টাকা জমি ভাড়া দেন। শুধু এরা দুজন নয়, হাসনাবাদ ব্রিজের নিচে বিআইডব্লিউটিএ জমিতে কোনো স্থাপনা থাকলে সেখান থেকে মাসোহারা নেন মিজান।
জানা যায়, বুড়িগঙ্গা তীরের এই জমিতে অর্ধশত বালু-পাথর ব্যবসায়ীর গদি ছিল। ২০২০ সালে ঢাকা নদী বন্দরের তৎকালীন যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে এসব গদি ও নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পরে উদ্ধার করা জমির ৬৪ শতাংশ নিয়ে একটি বাগান করা হয়। কয়েক মাসের মধ্যে বাগানটি দৃষ্টিনন্দন রূপ ধারণ করে এবং নদীতীরের সৌন্দর্য বহুগুণ বেড়ে যায়; কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও মিজানের লোলুপদৃষ্টিতে পড়ে বাগানটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাগানটি রক্ষায় দেওয়া কাঁটাতার বেশিরভাগ অংশে খুলে ফেলা হয়েছে। অযত্নে গাছগুলো হারাচ্ছে তার রূপ।
বালু ব্যবসায়ী আ. রাজ্জাক বলেন, এক সময় বাগান আছিল। এখন গাছ নাই। ফাঁকা জায়গায় বালু রাখি। বিনিময়ে মিজানকে মাসে ৫ হাজার টাকা দেই।
মিজান কে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, শুনিতো মিজান বিআইডব্লিউটিএর লোক। তারে টাকা না দিলে সদরঘাট থেকে (ঢাকা নদীবন্দর) লোকজন আসে মালামাল জব্দ করে, আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের ধরে নিয়ে হয়রানি করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগানটি সৃজনের সময় স্বেচ্ছায় বাগানটি দেখভাল করার দায়িত্ব নেন মিজান। এরপর থেকে সে বাগানের চারপাশের জমি ও নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা থেকে মাসোহারা আদায় শুরু করেন।
অভিযোগে বিষয়ে মিজানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক (ঢাকা নদীবন্দর) মো. আলমগীর কবির বলেন, মিজান নামে আমাদের কোনো স্টাফ নেই। এমনটি করলে সে প্রতারণা করছে। তাকে আইনের আওতায় দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, খোঁজখবর নিয়ে বাগানটি রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।