দেখতে দেখতে রমজান পেরিয়ে যাচ্ছে। ঘনিয়ে আসছে ঈদুল ফিতর। ততই বাড়ছে রংপুরসহ বিভাগজুড়ে ট্রেনের ধীরগতির মাত্রাও। এর ফলে রংপুর বিভাগে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় শুরু হয়েছে।
ঢাকাগামী প্রতিটি ট্রেন ২ ঘণ্টা থেকে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত লেটে চলাচল করছে। ট্রেন কখন আসবে কখন যাবে স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের এ তথ্য ও সঠিক নির্দেশনাও জানানো হয় না।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনের ১০ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। এনিয়ে প্রতিনিয়তই যাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ছে। যাত্রীরা বিভিন্ন ভাবে হয়রানিসহ ভোগান্তিতে পড়ছেন।
তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, রেলের ধীরগতি বা সিডিউল বিপর্যয় বলতে কিছু নেই। যা হচ্ছে তার জন্য সিঙ্গেল লাইন ও রেল ক্রসিংকে দায়ী করছেন তারা।
এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় লালমনিরহাট ডিভিশন সূত্রে জানা গেছে, এ ডিভিশন থেকে ১০ জোড়া অর্থাৎ ২০টি আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকায় যাতায়াত করে। ট্রেনগুলো হচ্ছে রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, বুড়িমারী এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা, দ্রুতযান, দোলনচাঁপা, করতোয়া এক্সপ্রেস ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস। প্রতিদিন এসব ট্রেনে ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। ঈদের আগেই প্রতিটি ট্রেনই নির্দিষ্ট সময়ের দেরিতে গন্তব্যের পথে যাতায়াত করছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, রংপুর থেকে রংপুর এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছাড়ার কথা থাকলে ট্রেনটি ২ ঘণ্টার বেশি সময় পরে ছেড়েছে। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস সকালে ছেড়েছে প্রায় ৫ ঘণ্টা দেরিতে। লালমনি এক্সপ্রেস দেড় ঘণ্টা লেটে ছেড়েছে। একইভাবে অন্যান্য ট্রেনগুলো নির্দিষ্ট সময়ের অনেক দেরিতে ছাড়ছে। এসব ট্রেন ঢাকা থেকে দেরিতে ছাড়ায় এই ধীরগতি বলে মনে করছেন রেল সংশ্লিষ্টরা। ফলে অনেকই নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারছে না। ট্রেনের ধীরগতির কারণে অনেকেই জরুরি কাজও করতে পারছে না। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
রংপুরের কাউনিয়া রেলস্টেশনে কথা হয় আমজাদ হোসেন ও দুলাল মিয়ার সঙ্গে। তারা বলেন, প্রতিনিয়তই ট্রেন শিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। কোনো না কোনো অজুহাতে ট্রেন যাওয়া-আসা দুই পথেই দেরি করছে। এতে তারা চরম বিপাকে পড়ছেন।
রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী শহিদুল ইসলাম ও হুমায়ন কবির নামের দুইজন জানান, ব্যবসায়িক কাজে তাদের প্রায় ঢাকায় যেতে হয়। রংপুর থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে অনেক দেরিতে। এতে সঠিক সময়ে তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না। এতে তারা ভোগান্তিতে পড়েন।
কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, রেল স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রতিদিনই। ট্রেন কখন আসবে কখন যাবে এর কোনো সঠিক নির্দেশনা নেই স্টেশনগুলোতে। ট্রেনের বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাচ্ছেন না বলে যাত্রীরা। রেল কর্তৃপক্ষও সঠিক তথ্য দেয় না। প্রায়ই তথ্য চাওয়ার কারণে যাত্রীর সাথে খারাপ ব্যবহারের ঘটনাও ঘটে।
এ ব্যাপারে রংপুর রেলস্টেশনের সুপার শঙ্কর গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, রংপুর এক্সপ্রেসসহ অন্যান্য ট্রেন কিছুটা দেরিতে ছাড়লেও সিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা নেই। অনেক স্থানে সিঙ্গেল লাইন ও ট্রেন ক্রসিংয়ে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে ট্রেন যাওয়া-আসায় দেরির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তারা সর্বোচ্চ যাত্রীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।